চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে চারটি বিদেশী ও দেশি প্রতিষ্ঠান মোট ১১ কোটি ১৩ লাখ ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এই বিনিয়োগের মাধ্যমে জুতা, চামড়া প্রক্রিয়াজাত ও তৈরি পোশাকের শিল্পের জন্য কারখানা ও পণ্য পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে, যা দেশের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণচঞ্চলতা যোগ করবে। আশা করা হচ্ছে, এতে সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) সঙ্গে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার বেপজা কমপ্লেক্সে এক চুক্তি সই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর। অন্যদিকে, চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন চীনের তাই মা শুজ (বিডি) কোম্পানির চেয়ারম্যান লিয়াও ওয়েইজুন, বাংলাদেশ সংশিন লেদার কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক ঝাং গুয়াংজিন, অ্যানরে হোল্ডিং (বিডি) কোম্পানির হু জিনলিন ও র্যাপটক্স ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোর্শেদ খান।
অতিমাত্রায় বড় বিনিয়োগটি চীনের তাই মা শুজ (বিডি) কোম্পানির, যারা ৫ কোটি ৫১ লাখ ডলার বিনিয়োগ করে একটি জুতা কারখানা তৈরি করবেন। এই কারখানা বছরে ৭০ লাখ জোড়া জুতা উৎপাদন করতে সক্ষম হবে, যেখানে ৫ হাজার ৯০০ জনের কর্মসংস্থান হবে।
সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশ সংশিন লেদার কোম্পানি ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিনিয়োগে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা তৈরির পরিকল্পনা করেছে, যা ক্রাস্ট লেদার থেকে বার্ষিক ৩ কোটি ৬০ লাখ বর্গফুট ফিনিশড লেদার উৎপাদন করবে এবং এতে প্রায় পাঁচশো মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
চীন-সিঙ্গাপুর মালিকানাধীন অ্যানরে হোল্ডিং (বিডি) কোম্পানি ২ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে একটি উন্নত মানের পরীক্ষাগার প্রতিষ্ঠা করবে, যা বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের শিল্পকারখানার পণ্য ও কাঁচামালের মান নিশ্চিত করবে। এই পরীক্ষাগারে ৭৭০ বাংলাদেশি কর্মসংস্থান পাবে। সঙ্গতিপূর্ণভাবে, র্যাপটক্স ইন্ডাস্ট্রিজ ১ কোটি ১২ লাখ ডলার বিনিয়োগে তৈরি পোশাকের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম উৎপাদন করবে, যা ৪৫৭ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
নতুন এই বিনিয়োগের খবর একদিকে যেমন দেশের শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, অন্যদিকে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে—এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করছেন সংশ্লিষ্ট সকল। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন এই বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তারা বিনিয়োগকারীদের জন্য শিবির করে দিচ্ছেন স্বচ্ছ ও ধ্রুব কাজের পরিবেশ। তিনি আরো বলেন, দ্রুত নির্মাণের কাজ শুরু করে যত দ্রুত সম্ভব রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করতে তারা উৎসাহিত। এছাড়া তিনি বিনিয়োগকারীদের বলছেন, তাঁদের সহকর্মী ও উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য।
এছাড়াও, মো. আশরাফুল কবীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শিল্প বিকাশে বিনিয়োগের সুযোগ বিবেচনা করতে চীনের বিনিয়োগকারীদের জোরালো আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, যশোর ও পটুয়াখালীতে নতুন শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠছে যা আগামী প্রজন্মের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে।
অনুষ্ঠানে শépe সেবা ও ব্যবসায়িক সুবিধার প্রশংসা করে শেনশিন গ্রুপের প্রধান জেসি বলেন, ‘বেপজা আমাদের জন্য এক অসাধারণ পছন্দ। আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যেতে মুখিয়ে আছি।’