123 Main Street, New York, NY 10001

ইসরায়েল হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছে। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে সাম্প্রতিক এক ইসরায়েলি বিমান হামলার পরের দিন রোববার এ ঘোষণা আসল। গত নভেম্বরে ইসরায়েল ও লেবাননের বৈরী পরিস্থিতির মধ্যে হিজবুলল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, সেনারা এখনও দক্ষিণ লেবাননের প্রায় পাঁচটি অঞ্চলে অবস্থান করছে ও নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে।

প্রতিরক্ষা বাহিনীর আধিকারিকরা বলেন, হিজবুল্লাহ আগুনের খেলায় লিপ্ত রয়েছে, আর লেবাননের শাসন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গড়িমসি করছে। তারা হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার এবং দক্ষিণ লেবানন থেকে সব অস্ত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দাবি করেন। এই প্রসঙ্গে তারা জানায়, তারা সর্বোচ্চ শক্তিতে অভিযান চালিয়ে যাবে এবং পরিস্থিতি আরও কঠোর হবে। উত্তর সীমান্তের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপোস থাকবে না।

অপর দিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেন, হিজবুল্লাহ সুযোগ নিতে চেয়ে আবারও অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করছে। তিনি আশ্বাস দেন, লেবাননের সরকার তাদের দায়িত্ব পালন করবে এবং হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করবে। নেতানিয়াহু সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যদি লেবানন সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে, তবে ইসরায়েল নিজেরই নির্দিষ্ট অধিকার প্রয়োগ করবে। তারা চাইছে এই অঞ্চলকে আরেকটি সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু হতে দেওয়া না।

চলমান উত্তেজনা চলাকালীন, গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল-লেবাননের মধ্যে সংঘর্ষ বেড়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে সীমান্তে শুরু হয় রকেট হামলা, যার ফলে উত্তর ইসরায়েলের বহু বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ের দিকে যেতে বাধ্য হন। এর এক বছর পেরিয়ে গেছে, তবে এক দীর্ঘ উত্তেজনার মাঝখানে বুক চিতিয়ে যুদ্ধের মুখে দাঁড়িয়ে এই দুই পক্ষ। দুই মাসেরও বেশি দিন যুদ্ধের সম্ভাবনা থাকলেও গত বছর অস্ত্রবিরতি বাধা দেয়।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইসরায়েল আবারো লেবাননে বিমান হামলা চালাচ্ছে, যা আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ লেবাননের এক হৃদয়বিদারক অভিযানে, ইসরায়েলি স্থলবাহিনী এক প্রাণঘাতী অভিযান চালায়। তার পর লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আওন সেনাবাহিনীকে বাধা দিতে নির্দেশ দেন।

অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতির পর লেবানন তার সাথে আলোচনা শুরু করে, কিন্তু পরে মনে হয় সেই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। এতে আরও জোরালো হয় সংঘাতের পরিস্থিতি। গত শনিবার নাবাতিয়ে জেলায় ইসরায়েলি হামলায় চারজন নিহত হন। লেবাননের সরকারি সংস্থাগুলোর বরাতে জানা যায়, ইসরায়েলি সেনারা একটি গাড়িতে দুঃখজনকভাবে হামলা চালায়, যেখানে নিহত ব্যক্তিরা হিজবুল্লাহর রাদওয়ান ইউনিটের সদস্য ছিলেন। সামরিক বাহিনী এই হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানায়, এই ঘটনার মাধ্যমে ইসরায়েল ও নাগরিকদের জন্য সরাসরি হুমকি সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠী ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়লেও এখনও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এবং অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল তাদের নেতা হাসান নাসরুল্লাহসহ অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের হত্যার জন্য বিমান হামলা চালায়। এরপর থেকে যুদ্ধবিরতি পরিস্থিতি চললেও, আন্তর্জাতিক চাপের মাঝেও হিজবুল্লাহ নিরস্ত্র হওয়ার ব্যাপারে তড়িগড়ি করছে না।

লেবানন সরকার দেশের ভিতরে বন্দোবস্ত নিয়ে অস্ত্রের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে, যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সব কিছু মিলে, এই অঞ্চলে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে, যা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *