123 Main Street, New York, NY 10001

ব্রিটেনের রাজপরিবারের শত্রুতাপূর্ণ পরিস্থিতি এখন খুবই নাটকীয় পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। রাজার তৃতীয় চার্লসের নির্দেশে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সমস্ত অনাড়ম্বর পদবি এবং রাজকীয় টাইটেলগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এমনকি, তাকে ভবিষ্যতে আর রাজকীয় বাসস্থান হিসেবে পরিচিত উইন্ডসর প্রাসাদে থাকতে দেওয়া হবে না। এই সিদ্ধান্তটি নেওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ, বিশেষ করে মার্কিন ঝুঁকি নেওয়া যৌন নিপীড়কের সঙ্গে তার যোগাযোগের অভিযোগ। আগে থেকেই তাকে বহিষ্কার করার জন্য চাপ সৃষ্টি হচ্ছিল, তবে এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। অ্যান্ড্রুর নতুন পরিচয় হবে অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর। তবে এই সিদ্ধান্ত শুধুই রাজা চার্লসের একান্তই নয়, রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও এতে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন, বিশেষ করে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী, ৪৩ বছর বয়সি ক্রাউন প্রিন্স উইলিয়াম। এর আগে এই মাসের শুরুর দিকে অ্যান্ড্রু ডিউক অব ইয়র্কের উপাধিটি হারিয়েছেন। ব্রিটিশ বাকিংহাম প্যালেসের প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়, অ্যান্ড্রুকে লন্ডনের পশ্চিমে অবস্থিত উইন্ডসর এস্টেটের রয়্যাল লজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বাসস্থান ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলের স্যান্ড্রিংহামে এক ব্যক্তিগত বাড়িতে থাকবেন। অ্যান্ড্রু, যিনি প্রয়াত রানি এলিজাবেথের দ্বিতীয় ছেলে এবং রাজা চার্লসের ছোট ভাই, ৬৫ বছর বয়সী। তিনি এক সময় ব্রিটিশ নৌবাহিনীর একজন জনপ্রিয় কর্মকর্তা ছিলেন। ১৯৮০-এর দশকে তিনি ফকল্যান্ডস যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তবে, ২০১১ সালে ব্রিটিশ বাণিজ্য দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন থেকে তিনি পদত্যাগ করেন এবং ২০১৯ সালে সব রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়েন। ২০২২ সালে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে তার সামরিক উপাধি ও রাজপৃষ্ঠপোষক পদ বাতিল হয়। সেই বছরেরই, নারীর দায়ের করা মামলায় অ্যান্ড্রু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ মেনে নেন, যদিও তিনি অস্বীকার করেন। অভিযোগটি ছিল—তিনি কিশোরী অবস্থায় সেই নারীর শরীরে যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন। তবে, জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর, এসব অভিযোগ আবারও আলোচনায় আসে। রাজপরিবার স্পষ্ট করে জানায়, অ্যান্ড্রু সব অভিযোগ অগ্রাহ্য করলেও, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিহত ও জীবিত উভয়ই অভিযোগকারী ব্যক্তির প্রতি রাজা ও রানি সমবেদনা জানিয়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত পত্রের মধ্যে দেখা গেছে, ২০১১ সালে এপস্টেইনের পাঠানো এক চিঠিতে অ্যান্ড্রু পুনরায় যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। ব্রিটিশ এক কর্মকর্তা বলেছেন, অ্যান্ড্রু সব কিছুই অস্বীকার করলেও তার ভুলের জন্য তারা তীব্র সমালোচনায় পড়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ মূলত রাজতন্ত্রের টিকে থাকা ও জনসমর্থন বজায় রাখতে নেওয়া হয়েছে, যাতে বিরূপ পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়। ব্রিটেনের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে রাজতন্ত্রের জনপ্রিয়তা অনেকটাই কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজার ও উইলিয়ামের এই সিদ্ধান্ত অর্জনকারী প্রমাণ করে, ব্রিটিশ রাজপরিবার এখন অন্যরকম এক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *