123 Main Street, New York, NY 10001

২০১৯ সালের পর প্রথমবারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং সরাসরি মুখোমুখি বসে আলোচনা করতে চলেছেন। এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ কোরিয়ার গিওংজুতে এক মানবিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন—এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (অ্যাপেক) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে। বুধবার סিএনএনের প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়ই সম্পর্কের উত্তাপ কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, তবে বিশ্লেষকদের মতামত, দুই শক্তির মধ্যে বেশ কিছু গুরত্বপূর্ণ ইস্যুতে এখনো সমাধান খুবই কঠিন।

বৈঠককে কেন্দ্র করে আগে থেকেই আলোচনা চলছিল সম্ভাব্য চুক্তির খসড়া নিয়ে। এর মধ্যে বলা হয়েছে, চীন বিরল খনিজ উপাদানের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সেটা কিছুটা শিথিল করতে পারে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রও চীনা পণ্যে আর নতুন করে শুল্ক আরোপের হুমকি থেকে সরে আসতে পারে। এই আলোচনা বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে সয়াবিন আমদানি-বাণিজ্য, ফেন্টানাইল নিয়ন্ত্রণ, এবং টিকটক সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতার সম্ভাবনাও উন্মোচন করছে।

তবে, বিশ্লেষকরা নিঃসন্দেহে বলছেন, বাণিজ্য যুদ্ধের বড় অংশ এখনও অক্ষুণ্ণ থাকছ। বর্তমানে চীনের পণ্যের উপর যুক্তরাষ্ট্রের গড় শুল্ক ৫৫ শতাংশের ऊपर, আর মার্কিন পণ্যের উপর চীনের শুল্ক প্রায় ৩২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র শত শত চীনা কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করে রেখেছে এবং উন্নতমানের এআই চিপ ও সরঞ্জাম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর পাল্টা হিসেবে, চীন কিছু মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে ‘অবিশ্বাস্য সত্তা’ তালিকায় যুক্ত করেছে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক উত্তেজনার কারণে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রবাহ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসে, যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রপ্তানি ২৭ শতাংশ কমে গেছে, আর মার্কিন পণ্য আমদানি ১৬ শতাংশ পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকতে পারে।

রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াং ওয়েন বলেছেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কাঠামোগত দ্বন্দ্ব এখনো অমীমাংসিত। ভবিষ্যতে সম্পর্ক আরও কঠিন হতে পারে।

অন্যদিকে, সাংহাইয়ের হুটং রিসার্চের বিশ্লেষক শান গুও মনে করেন, এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য হবে উত্তেজনা কমানো, এই আলোচনা কোনও স্থায়ী সমাধান দেওয়ার জন্য নয়।

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেনিস ওয়াইল্ডার আশা প্রকাশ করেন, এই আলোচনায় কৌশলগত ইতিবাচক ফলাফল আসতে পারে, তবুও বাণিজ্য যুদ্ধ এখানেই শেষ হবে না।

উভয় দেশই যেখানে এক দিকে চীনকে মার্কিন অর্থনীতির জন্য ধ্বংসের দায়ী করেন ট্রাম্প, অপরদিকে শি চিন পিং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার বার্তা দেন। বিশ্লেষকদের মতে, ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্কের পথ এখনো অনিশ্চিত, তবে বোঝা যাচ্ছে—সমস্যা সমাধানে কথোপকথনই এখন একমাত্র উপায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *