123 Main Street, New York, NY 10001

৪৫ বছর পর অবশেষে ঘানা ২০২৬ বিশ্বকাপে নিজেদের স্থান নিশ্চিত করল। ২০২৫ আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে হতাশাজনকভাবে শেষ মুহূর্তে বাদ পড়ার পরে অনেকের কাছে মনে হচ্ছিলো ঘানার জন্য এটা শেষ হয়ে গেছে। তবে এই ব্যর্থতার ক্ষত ভুলে উঠেছেন তারা। গত রোববার রাতে কমোরোসের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে তারা বিশ্বকাপের টিকিট কাটে। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে টটেনহ্যামের ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ কুদুসের একমাত্র গোলে দলটি জয় নিশ্চিত করে। এই জয়ে ঘানা পঞ্চম আফ্রিকান দেশ হিসেবে ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য কোয়ালিফাই করে। আগের বছরগুলোতে আলজেরিয়া, মিসর, মরক্কো ও তিউনিসিয়ার মতো দেশগুলো টুর্নামেন্টে যোগ্যতা অর্জন করলেও এই মৌসুমে ঘানাই এই মর্যাদা লাভ করেছে।

আক্রার রাজধানীতে এই জয়ের মাধ্যমে ঘানা গ্রুপ ‘আই’ থেকে ১০ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে শীর্ষে থেকে কোয়ালিফায়ার শেষ করে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মাদাগাস্কার থেকে তারা ছয় পয়েন্টে এগিয়ে। অন্যদিকে কমোরোস ১০ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে থাকলেও তাদের জন্য এই একটিই শেষ আশা। এই নিশ্চিতকরণের ফলে এখন বিশ্বকাপের জন্য কোয়ালিফাই হওয়া দেশের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১টি। বর্তমানে ৪৮ দলের এই বিশ্বকাপে এখনও ২৭টি দেশ সুযোগের জন্য অপেক্ষা করছে।

প্রথমার্ধে ঘানা বেশিরভাগ সময় নিষ্প্রাণ ফুটবল খেলেছিল। আগের নয় ম্যাচে ২২ গোলের রেকর্ড থাকলেও, ওই দিন কমোরোসের গোলরক্ষককে বেশ কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারেনি তাদের আক্রমণ। তবে বিরতির পর দৃশ্যপট বদলে যায়। থমাস পার্টের দারুণ পাস থেকে কাছ থেকে সহজভাবে কুদুস গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। এটাই ছিল তার বাছাইপর্বের দ্বিতীয় গোল।

আগের দুই দেখায় কমোরোস ঘানাকে হারিয়েছিল। ২০২২ আফ্রিকান নেশন্স কাপে এবং বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রথম রাউন্ডে তারা ঘানার মাটিতে ১-০ গোলের জয় তোলে। তবে এ বছর শেষ দুটো হার আর ভুলে গেছে ঘানা।

২০২৪ সালে আফ্রিকা কাপের ফাইনাল পর্বে স্থান না পাওয়ায় দেশজুড়ে প্রচুর হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। বিকল্প পরিকল্পনার আশা নিয়ে অনেকের মনোভাবের পরিবর্তন হয়। অটো অ্যাডো, যিনি দলটির কোচ, তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন, ‘আমি এমন মানুষ নই যে ব্যর্থতার মুখে হাল ছেড়ে দিই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি যে পথ পেরিয়ে এখানে পৌঁছেছি, তা জানলে কেউ পদত্যাগের কথা ভাবত না।’

প্রথমবারের মত কাতার ২০২২ বিশ্বকাপে দলটিকে তোলার পরে, দ্বিতীয় মেয়াদেও নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন অ্যাডো। নতুন কোচিং স্টাফের সহায়তায় দলকে পুনরায় উজ্জীবিত করেছেন তিনি। ১০ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে শীর্ষে থেকে তারা আবারও বিশ্বকাপে স্থান পেল। মূল লক্ষ্য ছিল শেষ দিন পর্যন্ত সাবধানে লড়াই চালিয়ে যাওয়া। মাদাগাস্কার লড়াই চালিয়ে গেলেও মোহাম্মদ কুদুসের গোলই ঘানার বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে।

এই বাছাইপর্বে সবচেয়ে আলোচিত নাম ছিলেন জর্ডান আয়ু। তিনি সাত গোল করে দলের মূল ভরসা হয়ে উঠেছেন।

ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬ হবে ঘানার পঞ্চম উপস্থিতি। ২০০৬ সালে জার্মানিতে তাদের অভিষেক হয়েছিল, এরপর ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় তারা এসে পৌঁছায় কোয়ার্টার ফাইনালে, যা দলের সর্বোচ্চ সাফল্য। সেই টুর্নামেন্টে অ্যামোয়া গিয়ান ছিলেন অন্যতম প্রধান তারকা। শেষ ষোলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তার দারুণ একটি গোল ঘানাকে কোয়ার্টারফাইনালে পাঠায়, যেখানে উরুগুয়ের বিপক্ষে নাটকীয় ম্যাচে ঘানার ইতিহাসে অন্যতম স্মরণীয় এক অধ্যায় লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *