123 Main Street, New York, NY 10001

নওগাঁর পত্নীতলা, মহাদেবপুর, রাণীনগর ও সদর উপজেলার মাঠে মাঠে এখন নতুন এক স্বাদ ও রঙের আমেজ দেখা যাচ্ছে। যেখানে আগে পটল ও করলা চাষ হত, সেখানে এখন বর্ষাকালীন সময়ের জন্য জনপ্রিয় হয়েছে মার্সেলো জাতের তরমুজ। মাঠে মাচার ওপর সবুজ পাতার পাশে ঝুলে থাকা কালো রঙের তরমুজগুলো অত্যন্ত আকর্ষণীয়। গাছ থেকে ছিঁড়ে না পড়া যাতে নিশ্চিত হয়, প্রত্যেকটি তরমুজের সঙ্গে জালি বাঁধা হয়েছে। এই দৃশ্যগুলো বেশ নজর কেড়েছে স্থানীয় কৃষকদের দৃষ্টি।

নওগাঁয় উচ্চ ফলনশীল এই মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষে ব্যাপক সফলতা আসতে শুরু করেছে। মাচা ও মালচিং পদ্ধতিতে এই তরমুজের চাষ করে চাষিরা আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন। এসব তরমুজের স্বাদ অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট, যা বাজারে ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি করেছে। লম্বাটে ডিম্বাকৃতি এই তরমুজের ভিতরের অংশের রং গাঢ় লাল। প্রত্যেকটির ওজন সাধারণত ৩ থেকে ৫ কেজি হয়, এবং একটি বিঘাতে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার তরমুজ উৎপাদিত হচ্ছে।

আরো জানা গেছে, মার্সেলো জাতের এই তরমুজ ভাইরাস সহনশীল, যা কৃষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা। প্রতিদিনই কৃষকরা তাদের ক্ষেত দেখার জন্য ভিড় করছেন, কারণ এই চাষের ফলন খুব দ্রুত আসে—গাছ লাগানোর ৬৫ থেকে ৭০ দিনের মধ্যেই ফল পাওয়া যায়।

রাণীনগরের একজন সফল চাষি নিরাঞ্জন চন্দ্র প্রামানিক বলেন, তিনি প্রতিবারের মতো এবছরও কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন তরমুজের চাষ করেছেন। ২৫ শতক জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মুক্তভাবে এই বিষমুক্ত মার্সেলো তরমুজ চাষ করেছেন। বাজারে এটি কেজি প্রতি ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কৃষকদের জন্য লাভজনক। তিনি আরো বলছেন, বর্ষাকালে এই ধরনের চাষের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তাদের মধ্যে আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে, এবং তারা আমাদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করছেন।

তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কামাল মাহমুদ শিপন বলেন, নিরাঞ্জন দাদার ক্ষেতের দেখাশোনা ও তরমুজের স্বাদ দেখে তিনি খুবই অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তিনি আগামী বছর দুই বিঘা জমিতে এই ধরনের তরমুজ চাষের পরিকল্পনা করেছেন।

এদিকে, কাশিমপুরের দম্পতি আলেক বেগ ও কুলসুম বানু বলেন, আগে তারা বাজার থেকে তরমুজ কিনে আনতেন, কিন্তু এখন গ্রীষ্মের তরমুজ বর্ষাকালেও দেখা যাচ্ছে। তারা কিছু তরমুজ কিনে খুশি, ওজন ৮ কেজি হওয়া দুটি তরমুজের দাম ৫০ কেজি টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলার চারটি উপজেলাতেই এখন বিষমুক্ত মার্সেলো তরমুজের চাষ চলছে, যেখানে ভেতরে গাঢ় লাল রঙের এই তরমুজের স্বাদ খুবই ভালো। কম খরচে ও বর্ষাকালে এই চাষের কারণে কৃষকরা ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তাদের উৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে, যাতে তারা আরও বেশি উৎপাদনে উৎসাহিত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *