123 Main Street, New York, NY 10001

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন শেষ হয়েছে, তবে ঘটনাগুলোর নাটক এখানেই শেষ না। তৎকালীন নির্বাচনে অংশ নেওয়া ক্লাব সংগঠকরা একটি নতুন অধ্যায় যোগ করেছেন, যা দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। আশপাশের পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে যখন তারা বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন, বোর্ডের কমিটিকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে তাদের অধীনে থাকা ৪৮টি ক্লাব দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে সরে গেছে।

নির্বাচনের পরে দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সাবেক বাংলাদেশের অধিনায়ক ও প্রখ্যাত ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবাল এই নির্বাচনকে ‘সমঝোতা’ এবং ‘হাস্যকর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে বলেন, ‘এটি কোনো নির্বাচনই ছিল না, বরং এটি ছিল এক অলিখিত সমঝোতা। আমি সেই নিয়ম ভেঙে এগিয়ে গিয়েছি কারণ আমি সত্যিকারের সুষ্ঠু নির্বাচন চাইছি।’

তামিম তার কার্যালয়ে গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা প্রথম দিন থেকেই একটি স্বচ্ছ ও সুবিন্যস্ত নির্বাচনের আশায় ছিলাম, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা হয়নি।’ তিনি ই-ভোটিং প্রক্রিয়ার ব্যাপারে তীব্র সমালোচনা করেন এবং ভোটের বিভ্রান্তি ও অসংগতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘৪২টি ভোটের মধ্যে ৩৪টি ই-ভোট ছিল, যে সকল ভোটার উপস্থিত ছিল, তারা প্রত্যেকেই সেই দিন ভোট দিয়েছেন, তাহলে ই-ভোটের দরকার কী ছিল?’

তামিম তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়ে বলেন, ‘আমি যদি ব্যক্তিগতভাবে আসতাম, আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী যে আমি বিজয়ী হতাম। আমি বরাবর বলেছি, আমি এবং আমার দল ক্রিকেটের স্বার্থে সবসময় পাশে থাকব।’

নির্বাচনের এক দিন আগে, সংগঠকদের পক্ষ থেকে নির্বাচন পেছানোর দাবি করে তিনটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছেও এই বিভাগের একটি স্মারকলিপি পাঠানো হয়। তারা দাবি জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের তারিখ বাড়ানো, অ্যাডহক কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া, এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করা।

তবে এই হুমকি উপেক্ষা করে ৬ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আমিনুল ইসলাম সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। এর প্রতিবাদে আজ ঘরোয়া ক্রিকেটের বয়কটের ডাক দেন সংগঠকরা, যেখানে মোহামেডান ক্লাবের কাউন্সিলর মাসুদুজ্জামান এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলতে বলতেই ক্লান্ত, আমাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে ৬ তারিখের বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে। আমরা চাইনি এই অবস্থা, কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনেনি। এখন থেকে সব প্রতিযোগিতা বর্জন করছি।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘ক্রিকেটের সৌন্দর্য হারিয়ে যেতে চলেছে, যদি এভাবেই চলতে থাকে। জেলা ক্রিকেটও বন্ধ থাকবে, কারণ আমরা সব পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধ থাকব। ক্লাবের প্রতিনিধিরা যদি হুমকি, ষড়যন্ত্রের শিকার হন, তবুও আমরা একতাবদ্ধ থাকব। এখন থেকে ক্রিকেটের সব ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে।’ এখানেই শেষ নয়, নির্বাচনের আগে লিগ বর্জনের হুমকি দেওয়া ক্লাবগুলো আরও একধাপ এগিয়ে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও ক্রিকেট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি যেন দেশের ফুটে থাকা ক্রিকেটের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *