যুক্তরাষ্ট্রের সংসদ সদস্য ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে চলমান স্বাস্থ্যসেবা তহবিল নিয়ে আলোচনা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমাধান না হওয়ায়, বুধবার রাত ১২টার পর থেকে দেশটিতে ফের সরকার শাটডাউন শুরু হবে। আমেরিকার পরিস্থিতি ওয়াশিংটন থেকে এএফপি সংবাদ সংস্থাকে নিশ্চিত করেছে। ইতিহাসে এটি একই ধরনের দীর্ঘতম শাটডাউন, যা প্রায় সাত বছর আগে ঘটে গিয়েছিল, তখন প্রায় ৩৫ দিন সরকার বেকাকায় পড়ে থাকায় নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল।
নতুন শাটডাউনের মধ্যে অনেক সরকারি দফতর ও সংস্থা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, যা লাখো সরকারি কর্মীর জীবনকেও প্রভাবিত করবে। ডেমোক্র্যাটদের স্বাস্থ্যসেবা তহবিল বৃদ্ধির দাবির কারণে এই অচলাবস্থা আরও বেশি জটিল হয়ে উঠেছে। ডেমোক্র্যাটরা চাইছে স্বাস্থ্যবিমার জন্য আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করতে, বিশেষ করে ওবামাকোর স্বাস্থ্য বীমা প্রোগ্রামের জন্য। তবে ট্রাম্প প্রশাসন সেই তহবিল বন্ধের পক্ষে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে, ডেমোক্র্যাটরা এই আলোচনায় অঘাটন বা ব্যর্থতা দেখিয়েছে এবং শাটডাউনের সময় সরকারি কর্মীদের কাটছাঁটের মাধ্যমে তাদের ‘শাস্তি’ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই শাটডাউনের মাধ্যমে অনেক কিছু ইতিবাচক হওয়া সম্ভব। এই পরিস্থিতি অধিবেশনে সক্রিয় বিরোধী ধরণের রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে।
আশা করা যাচ্ছে, যদি সিনেটে হাউসের প্রস্তাবিত স্বল্পকালীন তহবিল অনুমোদন না পায়, তবে রাত ১২:০১ মিনিট থেকে সরকার ধীরে ধীরে কার্যক্রম বন্ধ করতে শুরু করবে। সাধারণত, বাজেট নিয়ে উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনা হলেও, দীর্ঘ সুযোগ-সুবিধার জন্য এই পরিস্থিতি এতটা দীর্ঘ হয়নি। কৃষ্ণচূড়ার মতো এই বিষয়টি এখন বেশ চাপের মধ্যে পড়েছে, কারণ জনপ্রিয়দের মধ্যে বিভাজন আরও গভীর হচ্ছে।
বিশেষ করে, ট্রাম্পের নতুন চাকরি কমানোর হুমকি এবং এলন মাস্কের বড় পদক্ষেপে ফেডারেল কর্মীদের উদ্বেগ বেড়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা ঝুঁকিতে থাকায়, সিনেটের জন্য প্রয়োজনীয় ৬০ ভোটের মধ্যে রিপাবলিকানরা চাইছেন বর্তমান বাজেটের মেয়াদ নভেম্বরের মধ্যে বৃদ্ধি করতে। তাদের লক্ষ্য দীর্ঘমেয়াদি বাজেট আলোচনা পথ পরিষ্কার করা। আবার, ডেমোক্র্যাটরা চাইছেন স্বাস্থ্যসেবায় শত বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ বাড়াতে, বিশেষ করে ওবামাকো পরিচালিত স্বাস্থ্য বীমার জন্য। ট্রাম্প প্রশাসন এই বরাদ্দ প্রত্যাখ্যানের প্রস্তুতি নিয়েছে।
প্রায় সব সিনেট ডেমোক্র্যাট সদস্যরা স্বল্পকালীন এই বাজেট প্রস্তাবের বিপক্ষেও ভোট দিয়েছেন। এখনও ঠিক কত দিন এই শাটডাউন চলবে, তা স্পষ্ট নয়। ১৯৭৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই ধরনের শাটডাউন ২১ বার ঘটেছে, যার বেশিরভাগই অল্প সময়ের জন্য হলেও, কিছুই এত দীর্ঘ হয়নি।
সর্বশেষ, সবচেয়ে বড় শাটডাউনটি ২০১৮ সালে হয়েছে, যখন ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাটরা সীমান্ত প্রাচীরের জন্য অর্থ সংগ্রহে অটল ছিলেন। তখন প্রায় ৩৮০,০০০ সরকারি কর্মী বাধ্যতামূলক ছুটিতে যান, আর আরও ৪২০,০০০ মানুষ অচলাবস্থার মধ্যেই কাজ চালিয়ে যান।
শুক্রবার এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকছে বলে ধারণা করা হলেও, সিনেটের অধিবেশন আবার শুরু হবে। এই শাটডাউন গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ পরিষেবা ও নিরাপত্তা কার্যক্রমকে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না করলেও, সরকারি কর্মীদের বেতন ও পুনরায় কাজ শুরু অজানা সময়ের জন্য বিলম্বিত হতে পারে। সরকারি অফিসের অনুমানে, শাটডাউন চলাকালীন প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৭,৫০,০০০ কর্মী ছুটিতে যেতে পারে এবং তাদের তখনো আর বেতন পাওয়া সম্ভব হবে না।