চলতি বছর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইরান কমপক্ষে এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে বলে জানিয়েছে নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)। এই সংখ্যা গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে নারী, আফগান নাগরিক, বেলুচ, কুর্দি ও আরব সম্প্রদায়ের মানুষজনও রয়েছেন।
আইএইচআর জানিয়েছে, শুধু গত সপ্তাহেই অন্তত ৬৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যার অর্থ প্রতিদিন গড়ে আট থেকে নয়জন মানুষ ফাঁসির দড়িতে ঝুলে মারা যাচ্ছেন। এই ধারাবাহিক শাস্তির কারণে ইরানের মানবাধিকার পরিস্থিতি জটিলতর হয়ে উঠেছে বলে সংস্থাটি মনে করে। সংস্থাটি যোগ করে, এ ধরনের ব্যাপক মৃত্যুদণ্ডের কার্যক্রমের জন্য তারা ইরানি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গণহত্যার মতো অভিযোগ তুলেছে।
তথ্য অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে বেশিরভাগই মাদক লেনদেনে জড়িত ছিলেন—প্রায় ৫০ শতাংশ। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের দায়ে ৪৩ শতাংশ, দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগে ৩ শতাংশ, ধর্ষণের জন্য ৩ শতাংশ, এবং ইসরায়েলের গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে ১ শতাংশের বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এই সব মৃত্যুদণ্ডের মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশই সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়।
আইএইচআর-এর পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোঘাদ্দাম বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরানের কারাগারে ব্যাপক গণহত্যার মতো অভিযান শুরু হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে গভীর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। প্রক্রিয়া ও ন্যায্য বিচারের অভাবে বন্দিদের নির্বিচারে মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে নৃশংসতা চালানো মানবতাবিরোধী অপরাধের সমান।’
প্রসঙ্গত, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থার তথ্যানুযায়ী, চীনের পরে ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকারী দেশ। সেখানে হত্যা, ধর্ষণ ও গুপ্তচরবৃত্তির মতো অপরাধের জন্য সাধারণত ভোরবেলায় ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এজন্যই ইরানে মৃত্যুদণ্ডের হার অপরাধের সঙ্গে মূল্যায়িত হয়ে থাকে।