123 Main Street, New York, NY 10001

চলতি বছর জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহের কারণে কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে উঠেছে, যেখানে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রায় ৬ কোটি মানুষ (৫৭ মিলিয়ন) ঝুঁকিপূর্ণ উচ্চ তাপমাত্রার মুখোমুখি হয়েছেন। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ক্লাইমেট সেন্ট্রাল এই তথ্য প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে ৩০ মিলিয়ন মানুষ আরও ৩০ দিন পর্যন্ত তীব্র গরমের সঙ্গে সংগ্রাম করছেন। বিশ্ববাজারে ‘ঝুঁকিপূর্ণ তাপমাত্রায়’ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় বাংলাদেশ অবস্থান করেছে দশম স্থানে।

রাজধানী ঢাকা বিশ্বের বেশ কয়েকটি মেগাসিটির মধ্যে দশম স্থানে রয়েছে, যেখানে ৫২ দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল, যার মধ্যে ২৩ দিন ছিল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে আরও ১৫ দিন সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা মারাত্মক রকমের বৃদ্ধি পেয়েছিল। চট্টগ্রামে এই সময়ের মধ্যে ৫৯ দিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব স্পষ্ট দেখা গেছে। খুলনা, রাজশাহী ও গাজীপুরের মতো অন্যান্য শহরেও বিন্দুর পরিমাণে বাড়ছে তীব্র গরমের দিন সংখ্যা।

পৃথিবীর প্রায় প্রতিদিনের মতো এই গ্রীষ্মে প্রতি ৫ জনের মধ্যে অন্তত ১ জন—অর্থাৎ ১৮০ কোটির বেশি মানুষ—তাপপ্রবাহের প্রভাবের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৯৫৫ মিলিয়ন মানুষই ৩০ দিন বা তার বেশি সময় প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণ তাপমাত্রা সহ্য করছেন।

বিশ্বের মোট ১৮৩ দেশে এ ধরনের তাপমাত্রা দেখা গেছে, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই পরিস্থিতি দ্বিগুণ সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। ইউরোপ ও এশিয়ায় এই তাপপ্রবাহ সবচেয়ে বেশী অস্বাভাবিকতা দেখিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা না থাকলে এবং জলবায়ু সংকটের প্রস্তুতি না নিলে ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্য, কৃষি ও অর্থনীতি ব্যাপক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। ক্লাইমেট সেন্ট্রালের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ক্রিস্টিনা ডাহল বলেন, “এই বিশ্লেষণ প্রমাণ করে যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখনই প্রত্যক্ষ হয়ে উঠছে। এটি শুধু ভবিষ্যতের হুমকি নয়, এটি বর্তমানের বাস্তবতা।”

তিনি আরও বলেন, “অস্বাভাবিক গরম এখনই মানুষের স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যদি দ্রুত কার্বন নিঃসরণ কমানো না হয়, তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।”

এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই মৌসুমে প্রতিদিন বিশ্বের প্রতিটি পাঁচজনের একজন—অর্থাৎ অন্তত ১.৮ বিলিয়ন মানুষ—জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তীব্র তাপমাত্রার মুখোমুখি হয়েছে। প্রায় ৯৫০ মিলিয়ন মানুষ অতিরিক্ত ৩০ দিনের বেশি সময় ঝুঁকিপূর্ণ গরমের প্রতিযোগিতা করছেন।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, যদি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া না হয় এবং এই ধরনের জলবায়ু সংকটের জন্য প্রস্তুতি না নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্য, কৃষি, ও অর্থনীতি আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *