123 Main Street, New York, NY 10001

তোমার বাড়ির রঙিন মেলায় দেখেছিলাম বাইস্কোপের খেলা, যেখানে বাইস্কোপের অদ্ভুত মায়াজাল নিয়ে সবাই মুগ্ধ হত। সেই দিনগুলোতে প্রেমিকের বাড়িতে বাইস্কোপ দেখার জন্য অনেকে আকুল হতো, কাকুতি মিনতি করত। বাইস্কোপওয়ালারা গ্রামে গঞ্জে ঘুরে ঘুরে ছোট ছোট গ্রুপে ছবি দেখাত, সঙ্গে থাকতো একটি বাদ্যযন্ত্র যা বাজিয়ে সতর্ক করত, ‘বাইস্কোপ দেখবেন গো’। তখন অল্প দামে বা ধানে বা চালের বিনিময়ে এই আনন্দের প্রদর্শনী দেখতে পারা যেত। প্রায় ছোট-বড় সব ছেলে-মেয়েরা মা-দের কাছে থেকে কিছু টাকা বা ধান ধার্য করে বাইস্কোপ দেখার জন্য ছুটত। বাইস্কোপের পর্দা উঠলে চুপচাপ বসে মুখের সঙ্গে হাত দিয়ে ছবি দেখত সবাই, আর দেখা যেত সৌন্দর্য ও হাসির ঝলক। রূপগঞ্জে বর্তমানে আর এমন মজার বাইস্কোপ দেখা যায় না, গৃহের বাইরে খোলা বাজারে বা মেলায়ও এর দেখা শুধু স্মৃতি। এখন আধুনিক প্রযুক্তির দাপটে এই পুরনো মোহনীয় বিবরণ হারিয়ে যাচ্ছে, শুধু মনে রয়ে গেছে সেই দিনগুলির স্বর্ণালী মুহূর্ত। ছোট্ট শিশুরা আগে হাতে ধানের চাল বা পয়সা দিয়ে বাইস্কোপ দেখত, এখন আর সেই দিনগুলো মনে পড়ে না। বৃদ্ধ আবুল আলী বলেন, ‘কি হবে রে বাবা, এগুলো সব হারিয়ে যাচ্ছে। জীবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পেশাও বদলে গেছে। কতো कथा-গল্প, কতো ঐতিহ্য এখন শুধুই স্মৃতি। বাইস্কোপ দেখানো গ্রামীণ সিনেমা বা সিনেমা হলের ছবি এখন কল্পনার মতো। কালের পরিবর্তন এই রকম সব দৃশ্যের শেষ নিঃশ্বাস ফেলে চলে গেছে। চাকরিজীবী সালাম মুল্লা বলছেন, আমি নিজেও দেখেছি বাইস্কোপের ঝড়, দুপুরে বাড়ির উঠানে বসে ছবি দেখতাম সবাই। আজ সেই ছবিওয়ালা আর নেই—সবই কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান দপি বলেন, তিন দশক আগে আমি গ্রামে বাইস্কোপের জন্য খুব ব্যস্ত থাকতাম। বাব-মায়ের বকুনি খেয়েও দেখতাম, এই স্মৃতি আজও কিন্তু মনকে আনন্দ দেয়। সভ্যতার অগণিত উপহার আমাদের দিয়েছে, তবে অনেক কিছু হারিয়েও গেছে বারে বারে। আমাদের এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আর টিকে থাকছে না, বর্তমানে আমরা কেবল আধুনিকতার ছায়ায় আবদ্ধ। এই সব স্মৃতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব না, তবে আমাদের হৃদয়ে আজও রয়ে গেছে সেই দিনগুলির সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *