123 Main Street, New York, NY 10001

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং বলেছেন, বিশ্বস্ত ও সভ্য দেশ হিসেবে চীন-ভারতের বন্ধুত্ববান্ধব সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই বৃহৎ দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠলে তারা গ্লোবাল সাউথ অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। সম্প্রতি গতকাল রোববার চীনের তিয়ানজিন শহরে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুজন নেতা বৈঠক করেন, যেখানে শি চিন পিং এই মন্তব্য করেন। এই বিবৃতি অনুযায়ী, চীন ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ এই দুই দেশ বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এবং সভ্য দেশের অন্তর্ভুক্ত। শি চিন পিং উল্লেখ করেন, বিশ্ব এখন পরিবর্তনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, ভালো প্রতিবেশী হওয়া ও ড্রাগন ও হাতির সংযোগ অত্যন্ত জরুরি’, যেখানে ড্রাগন ও এলিফ্যান্ট হলো এই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রতীক। প্রেসিডেন্ট আরও অবহিত করেন, কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পর্ক পরিচালনা করা উচিত। তিনি বিশ্ববাচক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে আরও বেশি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে দেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এর পাশাপাশি, শি চিন পিং মে মাসে চীন-ভারত কূটনীতির ৭৫তম বর্ষপূর্তির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, বহুপাক্ষিকতা, বহুমেরু বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের স্থিতি বজায় রাখতে হবে। মোদি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এই বৈঠকে বিশ্বাস, সম্মান ও সংবেদনশীলতার উপর জোর দেন, যেখানে মোদি উল্লেখ করেন যে, সীমান্ত থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের পর শান্তি ও স্থিতিশীল পরিবেশ গড়ে উঠেছে। মোদি তার উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, ভারত পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্মান বজায় রেখে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি পাশাপাশি তিব্বতকে চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করে জানান, মাউন্ট কৈলাস ও মানসারোত্রসহ তীর্থযাত্রা আবার শুরু হবে। এ ছাড়া, উভয় দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচলের আবারও পরিকল্পনা চলছে। সাংহাই এসসিওর এই শীর্ষ সম্মেলনে ২০টির বেশি দেশের নেতারা অংশ নিয়েছেন, যেখানে বেশির ভাগই আঞ্চলিক। রোববার চীনে পৌঁছেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ অন্য নেতারা। এই বৈঠকগুলোতে প্রধানত পশ্চিমা চাপের বিপক্ষে দুই দেশের ঐক্য প্রদর্শনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। উল্লেখ্য, গত এক দশক ধরে সীমান্তে বিরোধের সমাধানে দুই দেশ অঙ্গীকারবদ্ধ হলেও, সম্প্রতি শি চিন পিং ও মোদিকে রাশিয়ায় একত্রে বৈঠক করে সীমান্তে টহলের সমঝোতা করেছে। এর মাধ্যমে প্রথমই দেখায় বিশ্বে সংশ্লিষ্ট দেশের মধ্যে বিবাদ কমছে। পাশাপাশি, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি যেমন হয়েছে, তেমনি দ্রুত সরাসরি বিমান চলাচল আবার শুরু হওয়ার খবরও এসেছে। এটি ২০২০ সাল থেকে বন্ধ ছিল। তবে কখন শুরু হবে এ ব্যাপারে ভারতীয় পক্ষের কেউ জানায়নি। চীনের তরফ থেকে, শুল্কের বিষয়েও মতবিরোধ চলছিল—বিশেষ করে ওয়াশিংটনের শুল্ক আরোপের প্রথম প্রভাব পড়েছিল ভারতের উপর—তা বদলে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এই পরিস্থিতিতে, দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে, তারা একে অন্যের উপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে।তবে, এই স যাবতীয় অগ্রগতি সত্ত্বেও, সীমান্তের জটিলতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এখনো স্থায়ী সমস্যা। ভারতের চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু ধাপ নেওয়া হলেও, এখনো সে সম্পর্কে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *