123 Main Street, New York, NY 10001

ছয় বছর পরে প্রথমবারের মতো চীন সফরে যাচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। আগামী সপ্তাহে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ সামরিক কুচকাওয়াজে তিনি অংশ নেবেন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার (২৭ আগস্ট) জানিয়েছেন, এই মহাযজ্ঞে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ মোট ২৬ জন বিদেশি নেতা উপস্থিত থাকবেন। তবে উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা প্রধান দেশের কোনো শীর্ষ নেতা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন না।

এটি হবে কিমের জন্য ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, যা নিতান্তই একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা। তদ্ব্যতীত, এই সফর হবে ২০১৯ সালের পর কিমের চীনে প্রথম সফর। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, এই সফরে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে যাচ্ছেন। তবে, কত দিন তিনি চীনে থাকবেন কিংবা শি জিনপিং, পুতিন বা অন্য কোনো নেতার সঙ্গে তার বৈঠক হবে কি না—এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য এখানে জানানো হয়নি।

চীন-জাপান যুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকী ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির স্মরণে এই অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আগামী বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) চীনে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছে। এতে যোগ দেবেন ইরান, বেলারুশ, সার্বিয়া, কিউবা, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান এবং মালয়েশিয়ার নেতারাও। এই কুচকাওয়াজে চীনের আধুনিক শক্তিশালী অস্ত্র ও প্রযুক্তির প্রদর্শনী হবে এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভাষণ দেবেন।

তবে, ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে বেশিরভাগ পশ্চিমা নেতাই এই মহরত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

চীন দীর্ঘদিন ধরে উত্তর কোরিয়ার প্রধান বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহায়ক হিসেবে পরিচিত। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের সম্পর্ক কিছুটা জটিল হয়ে উঠেছে। উত্তর কোরিয়া এখন রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করছে, বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ে সৈন্য ও গোলাবারুদ সরবরাহের বিনিময় মাধ্যমে তারা অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা পাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতিকে সচল রাখতে চীনের সহায়তা অত্যাবশ্যক। এ কারণেই এই সফরটি কিমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা সম্ভবত চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত খুঁজে পাওয়ার একটি চেষ্টাও বটে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, কিমের এই চীন সফরে নতুন কূটনৈতিক পরিকল্পনা থাকতে পারে, যার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া এবং বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সঙ্গে তার যোগাযোগও সুদৃঢ় হবে। এরই পাশাপাশি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের সম্পর্ক পুনরুज्जীবিত করার চেষ্টা থাকলেও, এখনো পর্যন্ত তারা সরাসরি কোন আলোচনা শুরু করেননি। তবে, বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বিশাল কৌশলগত সুবিধা এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে কিমের এই সফর বিভ্রান্তি কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন পথে পা বাড়ানোর সম্ভাবনা রযেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *