123 Main Street, New York, NY 10001

জুলাই মাসের আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নতুন সাক্ষ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ বিভিন্ন জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই মামলায় মোট ২৯ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই সাক্ষ্য দেওয়া হয়। তারা মনে করেন, হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনা ও অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের নাম উল্লেখ করেন। এসকল সাক্ষ্যার্থীদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আমীর হোসেন। মামলায় বর্তমানে ৮১ জনের মধ্যে ২৯ জনের সাক্ষ্য সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, এই মামলার তিন আসামির মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একজন শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান পলাতক রয়েছেন।

একই সময়ে, ঢাকায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের আবাসিক সার্জন মোস্তাক আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য দেন। তিনি জানিয়েছেন, জুলাই আন্দোলনকারীদের গুলি কখনো বা কোনো উঁচু স্থান বা হেলিকপ্টার থেকে ছুড়ুল ছিল। অনেক আহতের মাথা বা পিঠে গুলি লেগে বেরিয়ে গেছে। তখন সরকারের সমর্থক চিকিৎসকরা গুলিতে আহতদের চিকিৎসার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। আত্মঘাতী স্বেচ্ছাসেবী স্বাচিপের সদস্যরা জারির অভিসন্ধি ও বাধা দেন, এমনকি সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েও আহতদের চিকিৎসা দিতে মানা করা হয়।

তিনি আরও জানিয়েছেন, গত বছর ১৯, ২০, ২১ জুলাই ও ৪, ৫ আগস্ট সর্বোচ্চ সংখ্যক আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের বেশিরভাগের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছর। আন্দোলন চলাকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শহীদুল্লাহ হলের সামনে অ্যাম্বুলেন্স থামানো ও পরিচয় জানতে চাইতেন ছাত্রলীগের সদস্যরা। পরিচয় নিশ্চিত হলে হাসপাতালে ঢুকতে দিত তারা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিক্ষার্থীরা নিজের পরিচয় গোপন রাখতে অনুরোধ করতেন, কারণ ছাত্রলীগের কিছু কর্মী তার জন্য হয়রানি করবেন বলে ভয় পেয়ে।

ডা. মোস্তাক বলেন, “ছাত্রকদের গুলির চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের অনেক সমস্যা হয়েছে। একের পর এক বাধার সম্মুখীন হয়েছি। সদর দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী, তাদের চিকিৎসা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। এ কারণেই একাধিক চিকিৎসক বদলি হয়েছেন। এই ঘটনার জন্য দায়ী হিসেবে তিনি শেখ হাসিনা ও আল্লাহর নির্দেশ পালনে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে উল্লেখ করেন। তিনি পাশাপাশি দাবি করেন, সরকারকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের ফাঁসির সাজা দিতে হবে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিচার করতে হবে।

অপরদিকে, গত বছরের ৫ আগস্ট, রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের নানী সাইদুর রহমান খান তার সাক্ষ্য দেন। তিনি শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং অন্যরা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী বলে মনে করেন এবং সকলের ফাঁসির দাবি জানান। এটি প্রকাশ্য সত্যতা আরেকবার প্রমাণ করে যে, আন্দোলনের নামে সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *