চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখা পাকিস্তান থেকে আসা দুটি কনটেইনার থেকে বিশাল পরিমাণ ২৪ হাজার ৯৬০ কেজি আমদানি নিষিদ্ধ পপি সিড বা পোস্ত দানা জব্দ করেছেন। সেগুলোর ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই চালানগুলি ৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরে নামানো হয়। এই বিপুল পরিমাণ পণ্যটির বাজারমূল্য আনুমানিক সাড়ে ৬ কোটি টাকা হলেও, আমদানিকারকরা মাত্র ৩০ লাখ টাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার এইচএম কবির জানিয়েছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চালান দুটি আটক করা হয়। সেগুলো ছিল কোরবানিগঞ্জের মেসার্স আদিব ট্রেডিংয়ের নামে এবং বন্দর থেকে সরানো হয়েছিল ছাবের আহমেদ টিম্বার কম্পানি লিমিটেডের দখলে। দেশীয় আমদানি নীতি এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করে প্রতারণার মাধ্যমে এই চালানগুলি আনা হয়েছিল বলে ধারণা করছে কাস্টমস।
উল্লেখ্য, আমদানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী, পপি সিড বা পোস্ত দানাকে নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় রাখা হয়েছে। যদি এই পপি সিড অঙ্কুরোদগমের উপযোগী হয়, তবে এটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের (২০১৮) আওতায় ‘ক’ শ্রেণির মাদক হিসেবে গণ্য হবে। সাধারণত ভারতে এই দানা রান্নার মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, মাদক উপাদান বা অপব্যবহারের সম্ভাবনা থাকায় বেশ কিছু দেশেই এর আমদানিতে কড়াকড়ি রয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের শান্তিবাগের একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এমএইচ ট্রেডিং ১৪ অক্টোবর চালানটির খালাসের জন্য বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। সন্দেহের ভিত্তিতে, ২২ অক্টোবর এই চালানটির খালাস অবরুদ্ধ করে দীর্ঘ তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে দেখা যায়, প্রতারণার জন্য কনটেইনারের মুখে ৭ হাজার ২০০ কেজি পাখির খাবার সাজানো থাকলেও মূলত ভেতরে ছিল নিষিদ্ধ পপি সিড।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার বলেন, আটকের পর পণ্য দুটি নমুনা পাঠানো হয় স্থানীয় বিশ^বিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ল্যাব পরীক্ষায়। পরীক্ষায় দেখা যায়, পপি সিড হিসেবে এই খাদ্যদ্রব্যটি শনাক্ত হয়েছে। এরপর কাস্টম আইন, ২০২৩ অনুযায়ী এই চালানটি আনুষ্ঠানিকভাবে জব্দ করা হয়।
অতিরিক্ত, এই ঘটনায় জড়িত আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।