123 Main Street, New York, NY 10001

যুক্তরাষ্ট্র হিজবুল্লাহ সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই পদক্ষেপের মূল কারণ হলো, লাইসেন্সপ্রাপ্ত ও অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ইরান থেকে হিজবুল্লাহর কাছে অর্থ পাচার করার অভিযোগ। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন এই সংগঠনের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছে।

অধ্যাপকরা জানিয়েছেন, ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের কুদস ফোর্স এই বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত লেবাননে হিজবুল্লাহর জন্য এক বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ পাঠিয়েছে। এই অর্থের বেশিরভাগই মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানির মাধ্যমে হিজবুল্লাহর হাতে পৌঁছানো হয়। এই অর্থ তারা ব্যবহার করে তাদের আধা-সামরিক বাহিনীকে সমর্থন দেয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে এবং লেবাননের বর্তমান সরকারের সার্বভৌম নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আন্ডারসেক্রেটারি জন হার্লি বলেছেন, ‘লেবাননের মানুষ স্বাধীন, সমৃদ্ধ ও নিরাপদ থাকতে পারে যদি হিজবুল্লাহ ধ্বংস হয়ে যায় এবং ইরানের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকে।’ তবে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে ইসরায়েল লেবাননে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। প্রায় এক বছর আগের যুদ্ধবিরতি চলছিল, কিন্তু এর মাঝেই ইসরায়েল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে এই হামলায় একজন নিহত এবং বিকেলে আরও একজন আহত হয়েছেন। লেবানিজ সেনারা দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি সরিয়ে নিতে অভিযান চালাচ্ছে।

বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা গেছে, ইসরায়েল লেবাননের দক্ষিণে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে, উড়োজাহাজগুলো কিছু এলাকা থেকে বেসামরিক মানুষদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, হিজবুল্লাহ সামরিক সক্ষমতা পুনর্গঠনে নেমে পড়েছে। ব্রিটিশ সংবাদসংস্থা রয়টার্স এই খবর প্রকাশ করেছে।

জাতিসংঘের লেবাননে শান্তি রক্ষা বাহিনী (ইউএনআইএফআইএল) জানিয়েছে, এই হামলা জাতিসংঘের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাবের স্পষ্ট লঙ্ঘন। তারা ইসরায়েলকে অবিলম্বে হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে এবং লেবাননকে সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

লেবাননের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে হামলার কড়া নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি ইসরায়েলের নীতির ধারাবাহিকতা, যার লক্ষ্য হলো লেবাননের স্থিতিশীলতা নষ্ট করা এবং দক্ষিণাঞ্চলে ধ্বংসযজ্ঞ তৈরি।

প্রায় এক বছর আগের যুদ্ধবিরতির স্থগিত থাকা অবস্থায়ই ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে। এরপর লেবাননের সেনারা দক্ষিণে হিজবুল্লাহর ঘাঁটিগুলো সরিয়ে নিতে অভিযান চালিয়েছে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় একজন নিহত এবং আরও একজন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচাই আদ্রেয়ি বলছেন, তারা তিনটি এলাকা—আইতা আল-জাবাল, আল-তাইয়িবা ও তায়র দেব্বা থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পরে আরও দুটি এলাকাকে এই নির্দেশের আওতায় আনা হয়। এই এলাকাগুলো ইসরায়েলের সীমান্ত থেকে ৪ থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, প্রত্যেক এলাকায় নির্ধারিত স্থানের ৫০০ মিটার পর্যন্ত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তারা প্রত্যক্ষদর্শীদের সরিয়ে নিতে সহায়তা করছে। নির্দেশের এক ঘণ্টার মধ্যে এয়ারঅ্যাম্বুলেন্স দিয়ে হামলা শুরু হয়েছে, আর কিছুক্ষণ পর আকাশে ধোঁয়ার ঘন কুণ্ডলী দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্বেগ, সম্ভবত আবারও পূর্ণমাত্রার বিমান হামলা শুরু হতে পারে। তায়র দেব্বার মেয়র ফারিদ নাহনুহ বলেন, ‘আমরা খুবই বিপদজনক পরিস্থিতির মধ্যে আছি। যদি এটি অব্যাহত থাকে, তাহলে আমাদের জন্য কোনো আশাই নেই। কোথায় গিয়ে এটি বন্ধ হবে, কেউ জানে না।’

ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র শোশ বেদ্রোশিয়ান উল্লেখ করেন, তারা সীমান্ত রক্ষা করবে এবং হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধের শান্তিচুক্তির সম্পূর্ণ বাস্তবায়নে জোর দেবে। তিনি জানান, হিজবুল্লাহ যেন আবার শক্তি চাইতে না পারে, সেটি তারা নিশ্চিত করবেন।

অপর দিকে, হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতিতে থাকলেও ইসরায়ेलের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অধিকার তাদের আছে। সংগঠনটি পুরোপুরি নিরস্ত্র না হলেও দক্ষিণে সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডে তারা বাধা দেয়নি এবং গত এক বছরে কোনও হামলাও চালায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *