123 Main Street, New York, NY 10001

শ্রীবরদী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বর্ষীয়ান সাব-রেজিস্ট্রার মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষঘাত অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগপত্রটি সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় এমপি ইঞ্জিনিয়ার একেএম ফজলুল হকের আশীর্বাদে তিন বছর ধরে এই অফিসে বহাল রয়েছেন মাহফুজুর রহমান। তাঁর কার্যকাল থেকে অফিসে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের আধিপত্য সৃষ্টি হয়েছে, যা সরকারি কাজের স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি সরকারি জমির অব্যবহৃত অংশে জেলা প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই দালালদের জন্য শেড নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়, যেখানে দালালরা মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে থাকেন। অভিযোগ পত্রের অনুসারে, এই কাজে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।

অতিরিক্ত অভিযোগে বলা হয়, অফিসের বিভিন্ন মৌজার জমির শ্রেণি পরিবর্তন নিয়মিতভাবে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে করার কারণে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি, সরকারি ফি’র বাইরে জনপ্রতি ২০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষের প্রস্তাব ও আদায় করা হয়। এর মধ্যে ‘হেবা’ ঘোষণা করে দলিলে সরকারি ফি ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হয়।

২০২৩ সালের নভেম্বরে শ্রীবরদীতে অবৈধভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়ার বিষয়েও তদন্তের দাবি উঠেছে। ওই সময়ের একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাথে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগে জানানো হয়, এই নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়ায় নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন মাহফুজুর রহমান। দুর্নীতির এই সব ঘটনার পরেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগকারীদের দাবি।

এছাড়াও, অভিযোগে বলা হয়, সাব-রেজিস্ট্রির এই অফিস долгদিন ধরে ‘লাভজনক পোস্টিং’ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। ২০১৯ সালে অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান ভূঁইয়া ঘুষের টাকাসহ হাতে ধরা পড়ার পরও আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, মাহফুজুর রহমান নিয়মিত লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিজ খরচে রাখেন এবং সপ্তাহে তার বাসায় সিন্ডিকেটের সদস্যদের মাধ্যমে এই টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়। এমনকি ঢাকার উত্তারে তার স্ত্রীর নামে একাধিক ফ্ল্যাটের কথাও বলা হয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, জমি-সংক্রান্ত দলিলের জন্য অফিসে গেলে সাধারণ মানুষ অতিরিক্ত অর্থ অপচয় করতে বাধ্য হন, যা সরকারিকেও বড় ধরনের রাজস্ব হারানোয় অন্যায়। এই অপ্রকাশিত দুর্নীতির তদন্ত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদককে লিখিতভাবে অনুরোধ জানানো হয়।

অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রশ্ন উঠলে, সাব-রেজিস্ট্রার মাহফুজুর রহমান প্রথমে ফোন পেয়েও ব্যক্তিগত পরিচয় পাওয়ার পর আর কথাবার্তা করেননি। তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি এবং বারবার ফোন করলেও তা রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *