123 Main Street, New York, NY 10001

তীব্র অর্থসংকটের কারণে বিশ্বজুড়ে নয়টি শান্তিরক্ষা মিশন থেকে মোট এক-চতুর্থাংশ সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে জাতিসংঘ (ইউএন)। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি একাধিক শীর্ষ জাতিসংঘ কর্মকর্তার বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো নিশ্চিত করেছে।

একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তা জানান, মোট শান্তিরক্ষীদের প্রায় ২৫ শতাংশের বেশি—সাংগঠনিকভাবে সেনা, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামসহ—নিজ দেশের দিকে ফেরত পাঠানো হবে। এছাড়া অনেক বেসামরিক কর্মীকে মিশন থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রভাব পড়বে প্রায় ১৩ থেকে ১৪ হাজার শান্তিরক্ষী সদস্যের উপর।

বিশ্বে শান্তি অনুযায়ী জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় আর্থিক অবদানদাতা দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, যার অবদান প্রায় ২৬ শতাংশ। তার পরে রয়েছে চীন, যার অবদান প্রায় ২৪ শতাংশ। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থপ্রদান বাধ্যতামূলক হলেও, দেশটি বর্তমানে গুরুতর আর্থিক বকেয়ায় রয়েছে।

একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন আর্থিক বছর শুরু হওয়ার আগেই (১ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের বকেয়া ছিল ১.৫ বিলিয়ন বা ১৫০ কোটি ডলার। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের আরও ১৩০ কোটি ডলার যোগ হওয়ায় মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ২৮০ কোটি ডলারের বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত এই বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিলেও, এখনো কোনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি মার্কিন মিশন।

কালকিন্তু, হোয়াইট হাউসের বাজেট অফিসের সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দকৃত ৮০০ মিলিয়ন বা ৮০ কোটি ডলার শান্তিরক্ষা তহবিলের একতরফাভাবে বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, তারা প্রস্তাব করেছে যে, ২০২৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করে দেওয়া হবে, কারণ মালি, লেবানন ও কঙ্গোতে মিশনের কার্যকারিতা ব্যর্থতার মুখে পড়েছে।

অর্থসংকটের কারণে যেসব শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্য সংখ্যা কমানো হচ্ছে, তার অন্যতম হলো: দক্ষিণ সুদান, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, লেবানন, কসোভো, সাইপ্রাস, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, পশ্চিম সাহারা, ইসরায়েল-সিরিয়ার গোলান মালভূমির নিরস্ত্রীকরণ অঞ্চল এবং আবেয়ি (দক্ষিণ সুদান ও সুদানের যৌথ প্রশাসনিক অঞ্চল)।

এই অর্থনৈতিক ক্ষতি ও প্রত্যাহার পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই জাতিসংঘের ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন হচ্ছে। মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ইতিমধ্যে ব্যয় সাশ্রয় এবং দক্ষতা বৃদ্ধির নতুন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।

একজন ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, এই অর্থনৈতিক সংকট কেবল অস্থায়ী নয়, বরং এটি জাতিসংঘের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম, বৈশ্বিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সক্ষমতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *