123 Main Street, New York, NY 10001

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে ব্যবসায় ১০ শতাংশ শেয়ার দেওয়ার জন্য সম্মত হয়েছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইনটেল। এই চুক্তির ঘোষণা গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইনটেলের পক্ষ থেকে একসঙ্গে প্রকাশ করা হয়। বাইডেন প্রশাসনের সময় যে বিশাল অর্থের অনুদান দেওয়া হয়েছিল, তার বিনিময়ে ওয়াশিংটনের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার উদ্যোগ হিসেবে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইনটেলের কাছে মোট ৪৩৩.৩ মিলিয়ন সাধারণ শেয়ার পাবে, যা কোম্পানির মোট ৯.৯ শতাংশ অংশীদারিত্বের সমান। ইনটেল জানিয়ে রাখে, এই বিনিয়োগের মোট অঙ্ক দাঁড়াবে ৮.৯ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৫.৭ বিলিয়ন ডলার আসবে বাইডেন প্রশাসনের অধীনে পাস হওয়া ‘চিপস অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্ট’ থেকে প্রাপ্ত অনুদান থেকে, যা এখনো দেওয়া হয়নি। এছাড়া বাকি ৩.২ বিলিয়ন ডলার আসবে ‘সিকিউর এনক্লেভ প্রোগ্রামের’ অধীনে প্রদান করা পুরস্কার থেকে। ইনটেল আরও জানায়, এই ৮.৯ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের সঙ্গে আগের পাওয়া ২.২ বিলিয়ন ডলারের অনুদান যোগ হলে মোট অঙ্ক দাঁড়াবে ১১.১ বিলিয়ন ডলার। ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ লিখেছেন, এখন যুক্তরাষ্ট্রই ইনটেলের ১০ শতাংশ শেয়ারের পূর্ণ মালিক ও নিয়ন্ত্রক। তিনি দাবি করেন, ইনটেলের সিইও লিপ-বু ট্যানের সঙ্গে আলোচনা করার সময় তারা কোনো পরিশোধ করেনি। তবে ইনটেল স্পষ্ট করে জানিয়েছে, সরকারের এই মালিকানা সম্পূর্ণরূপে নিষ্ক্রিয় থাকবে; তাদের বোর্ডে কোনো প্রতিনিধি বা শাসনাধিকার থাকবে না। ট্রাম্প আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে এই অংশীদারিত্ব দেওয়া প্রতিষ্ঠানটির জন্যও ভালো, কারণ আমি তাদের বলেছিলাম, কোম্পানির ১০ শতাংশ আমাদের দেওয়া উচিত। বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক এক্সে বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক চুক্তি যা যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাকটর শিল্পকে আরও শক্তিশালী করবে।’ তবে এই পদক্ষেপকে কিছু বিশ্লেষক ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন। সিলিকন ভ্যালির বিভিন্ন কোম্পানি, বিশেষ করে ইনটেল এশিয়ার টিএসএমসি ও স্যামসাংয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পড়েছে। বাইডেনের সময় পাস হওয়া ‘চিপস অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্ট’ মূলত মার্কিন সেমিকন্ডাকটর শিল্পের শক্তি বাড়ানোর জন্য, যেখানে বিলিয়ন ডলারের অনুদান দেওয়া হয়। তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষক রব এন্ডারলে সতর্ক করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে ইনটেলের শেয়ার নেওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এটি বেসরকারি ব্যবসায় জাতীয়করণের দিকে নিয়ে যেতে পারে। ওয়াশিংটনের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কেটো ইনস্টিটিউটের স্কট লিনসিকোমও মন্তব্য করেন, এই সিদ্ধান্ত ‘প্রায় সবার জন্য ক্ষতিকর’। এটি ইনটেলের দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্বের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এতে বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তের বদলে রাজনৈতিক প্রভাব বেশি পড়বে। ইনটেল সিইও লিপ-বু ট্যান এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি নিশ্চিত করাই তাদের অঙ্গীকার। কোম্পানিটি আরো জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের উৎপাদন স্থাপনায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। এর আগে, চলতি মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে, জাতীয় নিরাপত্তার কারণেই তিনি ট্যানের পদত্যাগ চান। পাশাপাশি, জাপানভিত্তিক স্যামসাংসহ অন্যান্য বড় কোম্পানিও ইনটেলে ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *